অনেকেরই সকাল শুরু হয় এক কাপ ক্যাফেইন দিয়ে। চা অথবা কফির কাপে চুমুক না দিলে আলস্য যেন ছাড়তেই চায় না। তবে চা, কফি ছাড়া কোমল পানীয়, চকোলেটেও ক্যাফেইন থাকে। জেনে অবাক হবেন, এই ক্যাফেইনই আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে।
ওজন কমানোর পানীয়ের কথা উঠলে প্রথমেই আমাদের মাথায় গ্রিন টি’র কথা আসে। তবে আমরা অনেকেই কফি বা ক্যাফেইনের ব্যাপারটা জানি না। ওজন কমানোর ক্ষেত্রে কফি/ক্যাফেইন গ্রিন টি এর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি কার্যকরী।
এক কাপ কফিতে আনুমানিক ১০০ থেকে ১৫০ মিলি গ্রাম ক্যাফেইন থাকে। এক কাপ লাল চা বা ব্ল্যাক টিতে থাকে ৫০/৬০ মিলি গ্রাম আর গ্রিন টিতে আনুমানিক ৩৫ মিলি গ্রাম ক্যাফেইন থাকে।
এক কাপ কফির প্রভাব শরীরে মোটামুটি ছয় ঘণ্টা থাকে। এর মধ্যে তিন ঘণ্টা সময়কে সবচেয়ে কার্যকরী সময় ধরা হয়। তবে একই লেভেলের এনার্জি ধরে রাখতে হলে তিন ঘণ্টা পর পর কফি খেতে হবে।
তিন ঘণ্টা পর শরীর অনেক বেশি পরিশ্রান্ত হয়ে যায়। যেহেতু এনার্জি লেভেল বেড়ে যাচ্ছে, আপনার শরীর অনেক বেশি পরিশ্রম করছে। যত বেশি পরিশ্রম করবেন তত বেশি ক্লান্ত হবেন।
এবার দেখা যাক, কফি কিভাবে ওজন কমাতে সাহায্য করে...
ওয়ার্কআউটের আগে কফি খেলে ক্যাফেইন শরীরে বেশি পরিমাণ অ্যাড্রেনালিন হরমোন (বৃক্ক রস) নিঃসরণ করে। অ্যাড্রেনালিন হরমোন ফ্যাটকে ফ্যাটি এসিডে রূপান্তর করে, যা শরীর শক্তি হিসেবে ব্যবহার করে।
মানুষের শরীর স্বাভাবিকভাবে গ্লাইকোজেন ব্যবহার করে। তবে ওয়ার্কআউটের সময় যখন ফ্যাটকে ফ্যাটি এসিডে রূপান্তর করে দেওয়া হচ্ছে তখন শরীর এই ফ্যাটি এসিডকেই শক্তি হিসেবে ব্যবহার করছে। এক্ষেত্রে শরীর স্টোর এনার্জি খরচ করছে, ফলে ওজন কমছে। যারা দীর্ঘ সময় ওয়ার্কআউট করে তাদের ক্ষেত্রে ওজন কমাতে ক্যাফেইন অনেক বেশি কার্যকরী করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা কফি খেয়ে সাইক্লিং বা ম্যারাথনে দৌঁড়াতে গেছেন তারা অন্যদের চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি রাস্তা অতিক্রম করেছেন।
তবে যারা অল্প সময়ের জন্য ওয়ার্কআউট করেন তাদের ক্ষেত্রে ক্যাফেইন খুব বেশি উপকারী না। তবে দৌঁড়াদৌড়ি, দড়ি লাফ, হাই ইনটেনসিভ কার্ডিও করলে ক্যাফেইন ওজন কমাতে সাহায্য করে।
ক্যাফেইন কতোটা নিরাপদ?
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এড়াতে একজন মানুষের ক্যাফেইন গ্রহণের পরিমাণ ৫০০ মিলি গ্রামের মধ্যে থাকতে হবে। এর চেয়ে বেশি খেলে কফি প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে শরীর পানিশূন্য করে ফেলে। তবে বেশি কফি খেলে বেশি পরিমাণ পানিও খেতে হবে।
কফি রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে।
আরেকটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো কফি ফিজিক্যাল ডিপেন্ডেন্সি বাড়িয়ে দিতে পারে। কারণ কফি আসক্তিসৃষ্টিকারী পানীয়।
তাই যাদের ক্যাফেইন সেনসিটিভিটি আছে, তারা কফি থেকে দূরে থাকুন। যাদের ঘুমের সমস্যা হয়, তারা সন্ধ্যার পর ক্যাফেইন জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকবেন। আর যাদের হিমোগ্লোবিনের সমস্যা আছে, আয়রন লেভেল কম তারাও কফি থেকে দূরে থাকবেন।
No comments:
Post a Comment