পরিবারের সদস্য কিংবা বন্ধু-বান্ধবের সাথে যুক্ত থাকার জন্য আজকালের তরুণ প্রজন্মের কাছে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সুবাদে মানুষের সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার কতটুকু উন্নতি সাধিত হয়েছে তা নিয়ে বিতর্ক থাকতেই পারে। তবে এটা বন্ধু কিংবা পরিবারের সদস্যদের সাথে দ্রুত যোগাযোগে বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে। কিন্তু সামপ্রতিক কিছু গবেষণায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগজনক কিছু তথ্য দিয়েছেন গবেষকরা। বিভিন্ন গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে ব্যক্তি জীবনে নানা সমস্যার সূত্রপাত হচ্ছে। আর সব থেকে উদ্বেগের খবর, সোশ্যাল মিডিয়ার কারণ বিষণ্নতা বাড়ছে শিশু-কিশোরদের মধ্যে।
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিত্সক রঞ্জন চ্যাটার্জি এক তরুণের কেস স্টাডি থেকে বলেন, ১৬ বছর বয়সী এক তরুণ এতোটাই বিষণ্নতায় আক্রান্ত হয়েছিল যে আত্মহত্যার মতো পরিস্থিতি দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। তার জীবনের খুঁটিনাটি সম্পর্কে জানার পর তিনি দেখতে পান ঐ তরুণ অতি মাত্রায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর নির্ভর হয়ে পড়েছে। মি. চ্যাটার্জি ঐ তরুণকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের মাত্রা কমিয়ে দেয়ার পরামর্শ দেন। রাতের বেলা ঘুমাতে যাওয়ার এক ঘণ্টা আগেই তা বন্ধ করতে বললেন। সকাল বেলা ঘুম থেকে ওঠার পরও একই নিয়ম অনুসরণ করতে বললেন। ছেলেটি তার পরামর্শ অনুসরণ করায় নাটকীয় উন্নতি ঘটলো। ধীরে ধীরে বিষণ্নতা থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হলো সে। এই ধরনের অনেক উদাহরণ থেকে মি. চ্যাটার্জি দেখতে পেয়েছেন, তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর সোশ্যাল মিডিয়ার বেশ নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। তিনি বলেন, এটা খুব বড় একটা সমস্যা। এর থেকে মুক্তি পেতে আমাদের কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চলতে হবে। সমাজ ব্যবস্থাকে সচেতন করে তুলতে হলে ঠিক মতো প্রযুক্তি ব্যবহারের কৌশল রপ্ত করতে হবে। সেটি করতে পারলেই প্রযুক্তির ক্ষতিকর দিকগুলো এড়িয়ে চলা সম্ভব হবে। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ড. লাউয়িস থিওডোসিউও একই কথা বলেন।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতো শিশু কল্যাণ বিশেষজ্ঞরাও শিশু-কিশোরদের ওপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন। সমপ্রতি এমনই একটি শিশু কল্যাণ বিশেষজ্ঞ দল ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের কাছে আহবান জানিয়েছেন, যাতে শিশুদের জন্য বিশেষ কোন ফেসবুক অ্যাপ চালু করা হয়। তাদের বক্তব্য, শিশু-কিশোরদের জন্যও একইভাবে ফেসবুক ব্যবহারের সুযোগ রাখাটা কাণ্ডজ্ঞানহীনতার পরিচায়ক।-বিবিসি
No comments:
Post a Comment