মহাবিশ্বের ঊষালগ্নের আলোর ‘চিহ্ন’ পেলেন বিজ্ঞানীরা - জিনিয়াস ২৪ বিডি

নতুন কিছু জানতে সব সময় চোখ রাখুন

Smiley face

সর্বশেষ

Home Top Ad

For add : 01689145308

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Friday 2 March 2018

মহাবিশ্বের ঊষালগ্নের আলোর ‘চিহ্ন’ পেলেন বিজ্ঞানীরা



প্রথমবারের মত বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্বের ঊষালগ্নের আলোর চিহ্ন দেখতে পেয়েছেন। বিগ ব্যাংয়ের পর ১৩.৬ বিলিয়ন বছর আগে সৃষ্ট জগতের প্রথম তারাগুলো যখন প্রথম জ্বলে উঠছিল, তখনকার আলোর ‘ফিঙ্গারপ্রিন্ট’ বা চিহ্ন সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন বিজ্ঞানীরা।


একই সঙ্গে, বিজ্ঞানীরা সম্ভবত রহস্যময় ডার্ক ম্যাটারও প্রথমবারের মত সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন। ডার্ক ম্যাটার আমাদের পরিচিত কোনো বস্তুর মত আচরণ করার কথা নয়, তাই এটি কখনও সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয়নি। এটির অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেলে তা বর্তমান পদার্থ বিজ্ঞানের অনেকগুলো ধাঁধার সমাধান করতে সক্ষম হবে।
বুধবার ব্রিটিশ জার্নাল ন্যাচারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গবেষকরা হাইড্রোজেনে ছেড়ে যাওয়া তেজষ্ক্রিয়তা দেখে মহাবিশ্বের প্রথম আলোর চিহ্ন সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন।
গবেষণাটির পরিচালক অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্বিজ্ঞানী জুড বোমান বলেন, ‘এই প্রথম আমরা বিগ ব্যাং- এর বিলীয়মান আলো ছাড়া মহাবিশ্বের এতটা শুরুর দিকের কোনো সংকেত দেখতে পেলাম।’

বিজ্ঞানীরা মনে করেন, বিগ ব্যাং- এর ঠিক পর প্রায় ১৮ কোটি বছর সব কিছু অন্ধকার ছিল। ওই সময়কে বিজ্ঞানীরা ‘কসমিক ডার্ক এজ’ বলে অভিহিত করেন।
মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রথম প্লাজমা অবস্থার বস্তু ক্রমশ ঠান্ডা হয়ে হাইড্রোজেন পরমাণু গঠন করে। পরে সেগুলো একীভূত হয়ে প্রথম নক্ষত্রগুলো তৈরি করেছিল।
সাম্প্রতিক আবিষ্কারটির ফলে বিজ্ঞানীরা ‘মহাবিশ্বের ঊষালগ্নের’ অনুরুপ অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হলেন।
বিজ্ঞানীরা যা ধরতে সক্ষম হয়েছেন, তা হলো মহাশূন্যের গভীর থেকে আসা একটা রেডিও সিগন্যাল। একটা ফ্রিজের চেয়ে একটু বড় একটা অ্যান্টেনা দিয়ে তারা ওই সিগন্যাল ধরতে সক্ষম হন।
৫০ লাখ ডলারেরও কম খরচে তৈরি অ্যান্টেনাটি কয়েকশ’ কোটি ডলার ব্যয়ে তৈরি হাবল স্পেস টেলিস্কোপের চেয়ে অনেক বেশি দূরের এবং অনেক পুরাতন ঘটনার চিহ্ন পর্যবেক্ষণ করতে পারে।
জুড বোমান বলেন, ‘বিগ ব্যাং- এর পর প্রথম ফুটে ওঠা নক্ষত্রগুলো এই সিগন্যালটির উৎস।’
হারভার্ডের জ্যোতির্বিজ্ঞানী আভি লোয়েব বলেন, ‘যদি এই আবিষ্কারের ফলাফল সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়, তাহলে এর জন্য দু’টো নোবেল পুরস্কার দিতে হবে- ডার্ক ম্যাটারের অস্তিত্ব নিশ্চিত করতে পারায় একটা, আর মহাবিশ্বের প্রথম নক্ষত্রের সিগন্যাল ধরতে পারার জন্য আরেকটা।’
বোমানের দল তাদের আবিষ্কার অন্য গবেষকদের দিয়ে একাধিকবার পরীক্ষা করাতে রাজি আছেন। অসাধারণ আবিষ্কারের দাবির সপক্ষে অসাধারণ প্রমাণও দিতে হবে তাদের।

লোয়েব মন্তব্য করেন, এটা মহাবিশ্বের ইতিহাসের শুরুর দিকের একটি অধ্যায়ের প্রথম বাক্যের মত। বিজ্ঞানীদের আসলে ওই সময়ের আলো সত্যি সত্যি দেখতে পাওয়ার কথা নয়। জিনিসটি মূলত রেডিও সিগন্যালের উপস্থিতির ফলে তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের পরিবর্তন।
প্রথম অবস্থায় মহাবিশ্ব অন্ধকার ও শীতল ছিল। এখানে শুধু ছিল হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম। একবার নক্ষত্র গঠন শুরু হওয়ার পর সেগুলো অতিবেগুনী রশ্মি ছড়ানো শুরু করে। ওই অতিবেগুনী রশ্মি হাইড্রোজেনের পরমাণুতে এক ধরনের চিহ্ন রেখে যায়।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বিশেষ একটি তরঙ্গ দৈর্ঘ্যে অনুসন্ধান চালায়। যদি শুরুতে নক্ষত্র ও অতিবেগুনী রশ্মি দু’টোই থাকে তাহলে এক ধরনের চিহ্ন খুঁজে পাওয়ার কথা আর কোনো তারা না থাকলে আরেক ধরনের চিহ্ন খুঁজে পাওয়ার কথা। বোমানের দল শুরুর দিকের নক্ষত্রের খুব সুক্ষ্ম কিন্তু পরিষ্কার সিগন্যাল ধরতে সক্ষম হয়েছেন।
আমাদের গ্যালাক্সি মিল্কি ওয়েতে প্রচুর রেডিও সিগন্যাল ভেসে বেড়াচ্ছে। এর মধ্যে প্রথম তারকার থেকে ভেসে আসা সিগন্যাল ধরা খুব কঠিন ছিল। অস্ট্রেলিয়ার একটি নির্জন মরুভূমিতে বিজ্ঞানীরা তাদের অ্যান্টেনা স্থাপন করেন।
সিগন্যালটি ধরতে পারার পর ল্যাবরেটরিতে ডামি বা কৃত্রিম সিগন্যাল ব্যবহার করে তাদের ফলাফল সম্পর্কে নিশ্চিত হন গবেষকরা।

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here
Top